অনলাইনে জমির নামজারি কিভাবে করবনে: জমির খতিয়ানে পুরনো মালিকের নাম বাদ দিয়ে নতুন মালিকের নাম
প্রতিস্থাপনই হচ্ছে নামজারি। সহজ করে বললে, জমিসংক্রান্ত বিষয়ে মালিকানা পরিবর্তনকে বলা হয় নামজারি।
নামজারির অনলাইন আবেদনের ক্ষেত্রে কিছু নির্দেশনা দিয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয়। সেগুলো জানা থাকলে ফরম পূরণের সময় ভুল হওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে।
নামজারির অনলাইন আবেদনের ক্ষেত্রে কিছু নির্দেশনা দিয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয়। সেগুলো জানা থাকলে ফরম পূরণের সময় ভুল হওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে।
ওয়েব ডেস্ক: অনলাইনে জমির নামজারি
সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসে নামজারির (মিউটেশন) জন্য আবেদন করতে হয়। ভূমির মালিকানা পরিবর্তনের সাথে সাথে সহজে ও
দ্রুত নামজারি করার লক্ষ্যে অনলাইনে নামজারি ফি পরিশোধের ব্যবস্থাসহ ই-নামজারি সিস্টেম চালু করেছে ভূমি মন্ত্রণালয়।
নামজারির আবেদন নিষ্পত্তি সহজ করতে যে বিষয়ে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া দরকার সেটি হলো আবেদনের ফরম নির্ভুল ও
সঠিকভাবে পূরণ করা। ভুল বা তথ্যের গরমিলের কারণে নামজারি আবেদন মঞ্জুর হয় না।
আর তাই নামজারির অনলাইন আবেদনের ক্ষেত্রে কিছু নির্দেশনা দিয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয়। নিচে সেগুলো আলোচনা করা হল-
ই নামজারি আবেদন করার নিয়ম
অন-লাইন নামজারি সিস্টেমে ঢুকলে পাশাপাশি “অনলাইনে আবেদন করুন” এবং “আবেদন ট্র্যাকিং” নামে দুটি অংশ দেখা যাবে। বাম
পাশে “অনলাইনে আবেদন করুন” অংশের নীচে “নামজারি আবেদনের জন্য ক্লিক করুন”- লেখায় ক্লিক করলে আবেদন ফর্ম পূরণ
পাওয়া যাবে। সেটি পূরণ করতে হবে। তবে তার আগে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়ে রাখলে ভালো।
আবেদন দাখিলের সময় আবেদন ফি ২০/- ও নোটিশ জারি ফি ৫০/-, মোট ৭০/ টাকা অনলাইনে পরিশোধ করতে হবে। এজন্য নগদ,
রকেট, বিকাশ, উপায়, ভিসা কার্ড, মাস্টার কার্ডসহ অন্যান্য ইনস্ট্রুমেন্টস ব্যবহার করা যাবে। এরমধ্যে সুবিধামতো যেকোনো একটি
বেছে নিয়ে ৭০/-টাকা পরিশোধ করতে হবে।
ক্রয়সূত্রে সিলেক্ট: অনলাইনে জমির নামজারি
আবেদন ফরমে প্রথমেই যে জমিটির নামজারির আবেদন করছেন সেটি আপনি ক্রয়, ওয়ারিশ, হেবা, ডিক্রি, নিলাম, বন্দোবস্ত, অন্যান্য
কী সূত্রে পেয়েছেন তা চিহ্নিত করতে হবে। ক্রয়সূত্রে সিলেক্ট করলে আপনার সামনে নতুন একটি ফর্ম আসবে; যাতে আপনাকে কিছু
অতিরিক্ত তথ্য দিতে হবে। ভূমি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে জানানো হয়েছে, ক্রমান্বয়ে অন্যান্য সকল সূত্রে আবেদনের জন্য আলাদা ফরম
ডেভেলপ করা হবে। ক্রয়সূত্রে ছাড়া অন্যান্য সূত্রের ক্ষেত্রে আগের ফরমটিই চলমান আছে।
আবেদিত জমির তথ্য অংশে ক্রমান্বয়ে বিভাগ, জেলা, উপজেলা সিলেক্ট করার পর মৌজা সিলেক্ট করতে হবে। যেহেতু মৌজার একটু
দীর্ঘ। তাই আপনার মৌজাটি খুঁজে পেতে মৌজার নাম ও জেএল নম্বর মনে রাখুন। একটি নামজারি আবেদন শুধুমাত্র একটি মৌজার
জমির মধ্যেই সীমাবদ্ধ। অর্জিত জমি একাধিক মৌজায় হলে প্রতিটি মৌজার জমি নামজারির জন্য আলাদা আবেদন করতে হবে।
নামজারির আবেদন
সবশেষ জরিপ রেকর্ডের ভিত্তিতেই হবে। সে মোতাবেক আপনার এলাকার জন্য এসএ/এমআরএস, আরএস/বিএস, মহানগর, দিয়ারা,
সিএস যা প্রযোজ্য জরিপটি সিলেক্ট করতে হবে। আর তাই এ বিষয়ে আগেই নিশ্চিত থাকতে হবে।
এরপর জমির খতিয়ান এবং দাগ নম্বর, জমির পরিমাণ, খতিয়ানে উক্ত দাগে জমির পরিমাণ টাইপ করে লিখে দিতে হবে। একই ভাবে
একই খতিয়ান থেকে বা একই মৌজাভুক্ত একাধিক খতিয়ান থেকে আরও দাগে আরও জমি নামজারির সঙ্গে যুক্ত করতে হলে “আরও
খতিয়ান সংযুক্ত করুন” ও “আরও দাগ সংযুক্ত করুন” চেপে আরও খতিয়ান নম্বর, দাগ নম্বর, জমির পরিমাণ (একরে), খতিয়ানে উক্ত
দাগে জমির পরিমাণ ইত্যাদি লিখে দিতে হবে। এসব তথ্য দেয়ার সময় যাতে ভুল না হয় সেজন্য আপনার ল্যাপটপ/ডেস্কটপ কম্পিউটারে
একটি ফোল্ডার করে তাতে একটি ওয়ার্ড ফাইলে প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো অভ্র নিকশ ফন্টে টাইপ করে রাখতে পারেন। তাহলে আবেদনের
সময় তথ্যগুলো কপি-পেস্ট করে দিলেই হয়ে যাবে।
আরও পড়ুন: অনলাইনে নামজারির কাজ শুরু
ই-নামজারি আবেদন ফরম পূরণের নিয়ম: অনলাইনে জমির নামজারি
দলিলসূত্রে জমির মালিক হলে দলিল নম্বর, দলিলের তারিখ (সন মাস দিন সিলেক্টের মাধ্যমে) ও সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের নাম।
খতিয়ানে রেকর্ডীয় মালিকের নাম (একাধিক মালিক হলে সবার নাম), পিতা/স্বামীর নাম ও পূর্ণ ঠিকানা।
আবেদনকারী বা আবেদনকারীদের নাম ও পূর্ণ ঠিকানা, চালু থাকা বাংলাদেশি মোবাইল নম্বর, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর (অথবা পাসপোর্ট/
জন্ম নিবন্ধন সনদপত্র নম্বর) ও ইমেইল এড্রেস।
যদি আবেদনকারী যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদফতর (RJSC)-এর নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান হয় তাহলে প্রতিষ্ঠানের নাম,
প্রতিনিধির নাম, মোবাইল নম্বর, প্রতিনিধির জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, জন্ম তারিখ, পদবি, প্রতিষ্ঠানের RJSC-রেজিস্ট্রেশন নম্বর, নিবন্ধন
তারিখ, জেলা, উপজেলা, ঠিকানা।
আবেদনকারী সরকারি প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা হলে প্রতিষ্ঠানের নাম, প্রতিনিধির নাম, মোবাইল নম্বর, প্রতিনিধির জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্ম তারিখ, মোবাইল নম্বর, পদবি।
আবেদনকারী RJSC নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের বাইরে অন্য যেকোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হলে প্রতিষ্ঠানের নাম, ঠিকানা, প্রতিনিধির নাম,
মোবাইল নম্বর, প্রতিনিধির জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, জন্ম তারিখ, পদবি।
যাদের নাম কেটে নামজারি দেয়া হবে তাদের এবং যাদের প্রতিপক্ষ হিসেবে নোটিশ দিতে হবে তাদের সকলের নাম ও পূর্ণ ঠিকানা ও
মোবাইল নম্বর।
আবেদনকারী নিজে না হয়ে প্রতিনিধির মাধ্যমে আবেদন করলে সেই প্রতিনিধির নাম ও পূর্ণ ঠিকানা, সক্রিয় বাংলাদেশি মোবাইল নম্বর,
জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর (না থাকলে পাসপোর্ট/জন্ম নিবন্ধন সনদপত্র নম্বর) ও ইমেইল এড্রেস, বয়স ও আবেদনকারীর সাথে সম্পর্ক।
এবং
আবেদিত জমি দাতা বা দাতা মৃত হলে তার ওয়ারিশের এবং দাতা কোনো প্রতিষ্ঠান হলে প্রতিনিধির নাম ঠিকানা, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর,
জন্ম তারিখ ও মোবাইল নম্বর, পদবি, RJSC নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রেশন নম্বর, তারিখ, জেলা, উপজেলা, ঠিকানা।
ফরম পূরণের: অনলাইনে জমির নামজারি
সময় এইসব তথ্য সরাসরি লিখতে গেলে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তাই এগুলো আগে থেকেই ল্যাপটপ/ডেস্কটপ কম্পিউটারে একটি
ওয়ার্ড ফাইলে অভ্র নিকশ ফন্টে টাইপ করে রাখুন। তাহলে ফরম পূরণের সময় সহজেই কপি-পেস্ট করে দিতে পারবেন।
আবেদন ফর্ম পূরণের সময় আবেদনকারী/অবেদনকারীগণের প্রত্যেকের এবং আবেদনকারী নিজে না হয়ে প্রতিনিধি হলে প্রতিনিধির
অর্থাৎ আবেদনকারী পক্ষের প্রত্যেকের এক কপি করে ছবি (পাসপোর্ট সাইজ), নিজ নিজ স্বাক্ষর, জাতীয় পরিচয় পত্র/পাসপোর্ট/জন্ম
নিবন্ধ সনদ (যাহা প্রযোজ্য), আবেদনকারী RJSC নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান হলে নিবন্ধন সনদ, উওরাধিকার সূত্রে নামজারি হলে উত্তরাধিকার
সনদ, সবশেষ ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধের দাখিলা- প্রভৃতির স্ক্যান কপি সংযুক্ত করতে হবে।
** এই সব স্বাক্ষর ছবি ও কাগজ আলাদাভাবে jpg বা png ফরমেটে স্ক্যান করে ল্যাপটপ/ডেস্কটপ কম্পিউটারে ফোল্ডার করে রাখতে
পারেন। তাহলে ফরম পূরণের সময় সহজেই Chose file ক্লিকের মাধ্যমে সংযুক্ত করতে পারবেন।
আরও পড়ুন: নামজারিতে এসিল্যান্ডের ঘুষের ঘটনা তদন্তে কমিটি
আবেদিত জমির খতিয়ানের কপি, ক্রয়সূত্রে হলে দলিলের কপি, আদালতের রায়-ডিক্রি সূত্রে হলে রায় ডিক্রির কপি, অন্য সূত্রে হলে
সংশ্লিষ্ট কাগপত্রের কপি স্ক্যান করে সংযুক্ত করতে হবে। স্ক্যান ফাইলটি অবশ্যই pdf ফরমেটে হতে হবে।
** এক্ষেত্রে এই সব ডকুমেন্ট আলাদাভাবে pdf করে ল্যাপটপ/ডেস্কটপ কম্পিউটারে নির্দিষ্ট ফোল্ডার খুলে রাখতে পারেন। তাহলে ফরম
পূরণের সময় Chose file ক্লিকের মাধ্যমে সহজেই সংযুক্ত করতে পারবেন। প্রতিটি স্ক্যান ফাইল আপলোডের পর তা কী ধরণের ফাইল
(দলিল /খতিয়ান/ওয়ারিশ সনদ) তা ড্রপ ডাউন হতে সিলেক্ট করে নিতে হবে।
প্রতিটি pdf ফাইলের সাইজ কোনোভাবেই 1.25 MB এর বেশি হলে চলবে না এবং সবগুলো সংযুক্তি ফাইল মিলিয়ে অবশ্যই 25 MB-এর
মধ্যে হতে হবে।
সামগ্রিক ফাইল 25MB- এর বেশি হলে
https://www.pdf2go.com/resize-pdf অথবা https://www.sejda.com/compress-pdf অথবা এ ধরণের যেকোনো অনলাইন টুল
ব্যবহার করে pdf ফাইলের সাইজ কমানো যায়। এছাড়া Microsoft Office – Edit Pictures-Compress Pictures ব্যবহার করে jpg বা png ফাইলের সাইন কমানো যায়।
কারিগরি সমস্যার কারণে ডকুমেন্ট ছাড়াই আবেদন সাবমিট করতে চাইলে নিচের যেকোনো একটি অপশন সিলেক্ট করা যাবে-
“আমি আবেদন সাবমিট করার ৩ কর্মদিবসের মধ্যে সকল ডকুমেন্ট (প্রয়োজনীয় কাগজপত্র) এসিল্যান্ড অফিসে এসে জমা দেবো / আমি শুনানির দিন সকল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিবো।”
ক্রয়সূত্রে ফরমে আবেদনের সময় মৌজা নির্ধারণ করে আবেদনকারীকে একটি ঘোষণা দিতে হবে। অসত্য তথ্য প্রদানে আবেদন বাতিল হবার পাশাপাশি আইনগত শাস্তির সম্মুখীন শঙ্কা থাকায় আবেদনকারীকে অবশ্যই সঠিক ঘোষণা প্রদান করতে হবে।
যে সকল বিষয়ে নিশ্চিত হতে হবে –অনলাইনে জমির নামজারি
ক) সর্বশেষ রেকর্ড অথবা সর্বশেষ নামজারি হতে জমির মালিকানার ধারাবাহিকতা আছে কিনা অর্থাৎ মধ্যবর্তী হস্তান্তরের প্রমাণপত্র/বায়া দলিলসমূহ আছে কিনা?
খ) আবেদনকারীর দলিলমূলে মালিকানা দাবি ও হিস্যা সঠিক আছে কিনা?
গ) আবেদিত জমি দখলে আছে কিনা? যদি আবেদিত জমি দখলে না থাকে, সেক্ষেত্রে একটি ব্যাখ্যা আবেদনের সঙ্গে দিতে হবে।
ঘ) আংশিক খাস/ অর্পিত/ অধিগ্রহণকৃত আছে কিনা? আবেদিত জমি আংশিক খাস/ অর্পিত/ অধিগ্রহণকৃত হলে নিষ্কণ্টক অংশ আলাদাভাবে চিহ্নিত করার প্রমাণকসহ ব্যাখ্যা দিতে হবে।
ঙ) আবেদিত জমিতে কোনো দেওয়ানি মামলা আছে কিনা? মামলা থাকলে হস্তান্তরে কোনো নিষেধাজ্ঞা আছে কিনা? নিষেধাজ্ঞা নাই মর্মে আদালতের ইনফরমেশন স্লিপ সংযুক্ত করতে হবে।
চ) জমিতে সরকারি স্বার্থ আছে কিনা? থাকলে কোন ধরণের, তা নির্বাচন করতে হবে। দাগে সরকারি স্বার্থ সংশ্লিষ্ট অংশ (খাস/অর্পিত/পরিত্যক্ত/ওয়াকফ/বিনিময়/দেবোত্তর/অধিগ্রহণকৃত/খাসমহাল/কোর্ট অফ ওয়ার্ডস/সরকারি সংস্থা/অন্যান্য) চিহ্নিত করে আবেদিত জমি এর বাইরে হলে কোনো অংশে তা চিহ্নিত করতে এবং ব্যাখ্যা প্রদান করতে হবে।
ছ) সর্বশেষ অর্থ বছর পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট জমির ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করা আছে কিনা? ভূমি উন্নয়ন কর হাল নাগাদ না থাকলে আবেদনকারী তা হারাহারি ভাবে বকেয়াসহ হালনাগাদ পরিশোধ করবেন মর্মে ঘোষণা দিতে হবে।
জ) আবেদনে বর্ণিত তফসিল জমি এ্যাপার্টমেন্ট বা ফ্লোর স্পেস কিনা? যদি সেটা হয় তাহলে এ্যাপার্টমেন্ট নম্বর প্রদান করতে হবে, শুধু জমির জন্য এপার্টমেন্ট/ফ্লোর নম্বর প্রদান করতে হবে না।
ঝ) আবেদনকারী বা আবেদনকারীগণের এই মৌজায় বর্তমানে কোনো খতিয়ান আছে কিনা? যদি তাদের আবেদিত জমির মৌজায় এক বা একাধিক খতিয়ান থাকে, তাহলে ‘হ্যাঁ’ নির্ধারণ করে খতিয়ান নম্বর/নম্বরসমূহ এন্ট্রি করতে হবে। দুটি খতিয়ান নম্বরের মাঝে কমা (,) অথবা সেমিকোলন (;) ব্যবহার করতে হবে। ঘোষণা প্রদানের পর, জমির তফসিল সংক্রান্ত তথ্য প্রদান করতে হবে।
ফরম পূরণের সব কাজ সম্পন্ন হলে ‘দাখিল’ বাটনে ক্লিক করলে আবেদনের একটি প্রিভিউ দেখতে পাবেন। প্রিভিউটি ভালোভাবে দেখে সেখানে কোনও ভুল আছে কিনা যাচাই করতে হবে। যদি কোনো তথ্য সংশোধন করতে হয়, তাহলে আবেদন জমা (দাখিল) বাটন নিশ্চিত করার আগেই প্রয়োজনীয় সংশোধন করে নিতে পারবেন। একবার আবেদন জমা হয়ে গেলে আর সংশোধন করা যাবে না।
ই নামজারি ট্রাকিং/ চেক
আবেদন প্রিভিউ-এর কপি সেভ ও প্রিন্ট করে রাখুন। ‘দাখিল‘ বাটন নিশ্চিত করার পর আবেদন নম্বরসহ একটি পেজ আসবে, যা সেভ ও প্রিন্ট করে রাখুন। আবেদন নম্বরটি ট্র্যাকিং নম্বর হিসেবে ব্যবহার করে পরবর্তীতে আপনার এই নামজারির সব তথ্য অনুসন্ধান করতে পারবেন।
আবেদন জমা হয়ে গেলে আবেদন নম্বরসহ যে পেজ আসবে সেখানে আবেদন ও নোটিশ ফি হিসেবে একসঙ্গে ৭০/-টাকা পেমেন্ট করার সুযোগ পাবেন। পেমেট হবার পর আবেদন নম্বরসহ পেমেন্ট কনফার্মেশনের একটি মেসেজ আসবে। সেই মেসেজের নিচে থাকা পেমেন্ট রিসিপ্ট বাটন চাপলে টাকা জমার রিসিপ্ট পাবেন এবং সেটি প্রিন্ট করে নিতে পারবেন। তাছাড়া মেসেজের নিচে থাকা আবেদন প্রিন্ট বাটন চেপে আবেদনটিও প্রিন্ট করতে বা পিডিএফ কপি সংরক্ষণ করে নিতে পারবেন।
অনলাইনে শুনানি করতে চাইলে পেমেন্ট করার পর্যায়ে এই প্রশ্নে ‘হ্যাঁ’ নির্বাচন করবেন
অথবা http://oh.lams.gov.bd লিংকে রিকোয়েস্ট প্রদান করতে হবে। এ বিষয়ে সহকারি কমিশনার (ভূমি) চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন এবং অনলাইন শুনানির জন্য একটি লিংক আবেদনে দেয়া মোবাইলে পাঠাবেন। শুনানির আগে খসড়া খতিয়ানটি নাগরিক কর্নার থেকে দেখা যাবে। খসড়া খতিয়ানে কোনো তথ্য ভুল থাকলে শুনানির সময় সহকারি কমিশনারকে (ভূমি) অবগত করবেন।
একটি ভূমি নামজারি প্রক্রিয়া সাধারণত ২৮ দিনে নিষ্পত্তি হয়ে যায়। সহকারি কমিশনার (ভূমি) এই আবেদনের চূড়ান্ত অনুমোদনের আদেশ করার পর অফিস সহকারি অনলাইনে খতিয়ান প্রস্তুত করবেন। খতিয়ান প্রস্তুত হলে ডিসিআর (DCR) ফি দেয়ার জন্য সিস্টেমে প্রদত্ত মোবাইলে SMS পাঠানো হবে। এ পর্যায়ে land.gov.bd-তে গিয়ে ই-নামজারি পেজে আবেদন ট্র্যাকিং অপশনে বিভাগ সিলেক্ট করে আবেদন নম্বর, জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর দিয়ে ট্রাকিং করে আবেদন মঞ্জুর হয়েছে কিনা যাচাই করতে পারবেন এবং পেজে প্রদত্ত মোবাইল ওয়ালেট কিংবা ইন্টারনেট ব্যাংকিং থেকে সুবিধাজনক একটি অপশনে ক্লিক করে নির্দেশনা অনুসরণের মাধ্যমে নগদ, রকেট, বিকাশ, উপায়,ভিসা কার্ড, মাস্টার কার্ডসহ অন্যান্য ইনস্ট্রুমেন্টস ব্যবহার করে অনলাইনে ডিসিআর (DCR) ফি ১,১০০ টাকা পরিশোধ করতে পারবেন। এই ফি পরিশোধ করলে অনলাইনেই চালান প্রক্রিয়া শুরু হবে। স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালান পরিশোধিত হলে https://mutation.land.gov.bd/ এই লিঙ্কে গিয়ে আবেদন ট্র্যাকিং করে খতিয়ান প্রিন্ট এবং ডিসিআর প্রিন্ট কপিটি পাওয়া যাবে।
কিউআর কোডযুক্ত (Quick Response Code) অনলাইনে জমির নামজারি
অনলাইন ডিসিআর (Duplicate Carbon Receipt) ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে প্রদত্ত ডিসিআর-এর সমতুল্য এবং আইনগতভাবে বৈধ ও সর্বক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য ও ব্যবহারযোগ্য হওয়ায় আপনাকে ভূমি অফিসে গিয়ে কোনো ম্যানুয়াল ডিসিআর সংগ্রহ করতে হবে না।