যে সকল খাবার ভুলেও গরম করে খাওয়া যাবে না
যে সকল খাবার ভুলেও গরম করে খাওয়া যাবে না: কর্মব্যস্ত জীবনে আমরা সময় বাঁচানোর জন্য কয়েকদিনের খাবার একসঙ্গে রান্না করে ফ্রিজে রেখে দেই এবং পরে সেটা অল্প অল্প করে গরম করে খাই।
এটি আসলেই একটি ভালো অভ্যাস।
কারণ এতে করে খাবার এবং সময় কোনোটাই অপচয় হয় না।
তবে কিছু খাবার আছে যা পুনরায় গরম করার ফলে উক্ত খাবার তার কার্যকারিতা ও পুষ্টিগুণ হারায় এবং অনেক সময় খাবার বিষাক্তও হয়ে যায়।
আসুন জেনে নিই কোন খাবারগুলো রান্নার পর রেখে দিয়ে আবার গরম করে খেলে স্বাস্থ্যের ক্ষতি হতে পারে।
আলু: পুনরায় গরম করা হলে আলু পুষ্টিগুণ হারায়।
এছাড়া আলু রান্নার পর সাধারণ তাপমাত্রায় দীর্ঘ সময় রেখে দিলেও এটি পুষ্টিগুণ হারানোর সঙ্গে সঙ্গে বিষাক্ত হয়ে ওটে, যা খেলে অসুস্থ হয়ে পড়ার সম্ভবনা থাকে।
ভাত: ভাত রান্নার পর আপনি যেভাবেই রেখে দেন না কেন এটি ধীরে ধীরে পুষ্টিগুণ হারিয়ে ফেলে।
চালে স্পোরস নামক এক ধরনের উপাদান থাকে যা ব্যাকটেরিয়ায় রূপান্তরিত হয় এবং রান্নার পরও এই ব্যাকটেরিয়া নষ্ট হয় না।
ফলে ভাত রান্না করে রেখে দেওয়া বা পুনরায় গরম করে খাওয়া উভয়ই ক্ষতিকর। এটা খেলে ডায়রিয়া এবং বমি হতে পারে।
ডিম: উচ্চ মাত্রার প্রোটিন থাকায় ডিম সকলের নাস্তার আবশ্যিক উপাদান। তবে ডিম হচ্ছে এমন একটি খাবার যা পুনরায় উচ্চ তাপের সংস্পর্শে এলে বিষাক্ত হয়ে যায়।
ফলে রান্না করা ডিম পুনরায় গরম করে খেলে আমাদের হঠাৎ করেই পেট খারাপ হতে পারে।
মুরগী: মাশরুমের মতো মুরগী উচ্চ মাত্রার প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার।
তবে উচ্চ তাপমাত্রায় পুনরায় গরম করে খেলে এই মুরগীই হয়ে উঠতে পারে আপনার জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক খাবার।
কারণ পুনরায় গরম করলে এতে থাকা উচ্চ মাত্রার প্রোটিনের কার্যকারিতার পরিবর্তন হয় এবং তা মারাত্বক হজমের সমস্যা সৃষ্টি করে।
তবে রান্না করা মুরগী যদি একান্তই গরম করে খাওয়ার দরকার হয় তবে তা নিম্ন তাপমাত্রায় একটু সময় নিয়ে গরম করা উচিত।
পালং শাক: অন্যান্য সবুজ পাতাযুক্ত শাক-সবজির মতোই পালংশাকে উচ্চ মাত্রার আয়রণ ও নাইট্রেট থাকে। তবে পালং শাকও পুনরায় গরম করা বিপজ্জনক।
কা্রণ উচ্চমাত্রার নাইট্রেট সমৃদ্ধ পালং শাক রান্নার পর যখন পুনরায় গরম করা হয় তখন তা পুরোপুরি নাইট্রাইটে পরিনত হয় যা খেলে দেহে ক্যানসার কোষ সৃষ্টির সম্ভাবনা থাকে।
যে সকল খাবার ভুলেও গরম করে খাওয়া যাবে না
তেল: আঙুর তেল, আখরোট তেল, অ্যাভোকাডো (নাশপতির আকারের উষ্ণমণ্ডলীয় সবুজ ফল) তেল, হেজেল ন্যাট (এক ধরনের বাদাম) তেল দিয়ে খাবার রান্না করলে খাবার অত্যন্ত সস্বাদু হয়।
তবে বিপত্তি বাধে যখন আপনি এই খাবার পুনরায় গরম করে খেতে যাবেন। কারণ এই তেলগুলো দিয়ে রান্না করা খাবার পুনরায় গরম করলে খাবার দিয়ে খুব বিশ্রি গন্ধের সৃষ্টি হয় এবং এই খাবার পেটের পীড়ার অন্যতম কারণ হতে পারে।
শালগম: শালগম সাধারণত স্যুপ বানানোর জন্য বেশি ব্যবহার করা হয়।
তবে উচ্চ মাত্রার নাইট্রেট সমৃদ্ধ শালগম রান্নার পর পুনরায় গরম করা হলে বিষাক্ত হয়ে যেতে পারে।
মাশরুম: মাশরুম উচ্চ মাত্রায় প্রোটিন সমৃদ্ধ। তবে মাশরুম যেদিন রান্না করা হয় সেদিনই খেয়ে ফেলা উত্তম।
উচ্চমাত্রায় প্রোটিন সমৃদ্ধ হওয়ার কারণে রান্না করা মাশরুম গরম করা হলে প্রোটিন নষ্ট হয়ে যায়।
ফলে পুনরায় গরম করা মাশরুম খেলে তা পেটের জন্য মারাত্বক ক্ষতিকর, এমনকি তা হৃদরোগের কারণও হতে পারে।
বিট: বিট পালং শাকের মতো উচ্চ মাত্রায় নাইট্রেট সমৃদ্ধ সবজি।
তবে রান্না করা বিট পুনরায় গরম করে খেলে তা পেটের অসুখের কারণ হতে পারে।
সেলারি (ধনে গাছের ডাটা): সেলারি সবজিটিও উচ্চ মাত্রায় নাইট্রেট সমৃদ্ধ।
তবে সেলারি ডাটা পুনরায় গরম করলে এর নাইট্রেট পুরোপুরি নাইট্রেইটে রূপান্তরিত হয়।
শরীরে বেশি মাত্রায় নাইট্রেইট প্রবেশ করলে তা মেথিমোগ্লোবিনেমিয়ার ঝুঁকি সৃষ্টি করে।
এটি এমন একটি পর্যায়, যেখানে নাইট্রেইটে শরীরের রক্তে হেমোগ্লোবিন ও আয়রনের সঙ্গে ইন্টারঅ্যাক্ট করে জীবন্ত কোষে অক্সিজেন বহনে বাধা দেয়।
যা শারীরিক জটিলতা থেকে শুরু করে মৃত্যুও ঘটাতে পারে।
তথ্যসূত্র: Times of India
যে সকল খাবার ভুলেও গরম করে খাওয়া যাবে না